দুধ খাওয়ার সেরা ১৭টি উপকারিতা: বাংলাদেশের মানুষের কাছে দুধ খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। দুধ খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। কিন্তু দুধের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারণ দুধে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস ইত্যাদি যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
তাই প্রতিদিন যদি এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন তাহলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নিই দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

দুধের পুষ্টিগুন
দুধের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। দুধ পুষ্টিগুণে ভরপুর। দুধে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস, খনিজ পদার্থ, আয়রন, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, কোবাল্ট, আয়োডিন ইত্যাদি রয়েছে।
দুধ খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যদি আগে দুধের উপকারিতা সম্পর্কে না জানতেন তাহলে দুধের উপকারিতা জেনে আপনি নিশ্চয়ই অবাক হবেন। কারণ দুধ আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে একটি কার্যকরী খাবার। তাই দুধ খাওয়ার উপকারিতাগুলো নিচে দেওয়া হল:
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে
- দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
- পেটের সমস্যা সারায়
- মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে
- হার্ট সুস্থ রাখে
- হাড় এবং পেশী শক্তিশালী করে
- চুল স্বাস্থ্যকর করে
- ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
- শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে
- ফিটনেস আপনাকে ফিট এবং সুস্থ রাখে
- শরীরে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে
- পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়
- রাতে ভালো ঘুমের জন্য ভালো
- শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
১) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পুষ্টি উপাদান। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এছাড়াও দুধে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
২) ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখতে
গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, দুধ খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে বলে জানা গেছে। দুধে এমন উপাদান রয়েছে যা ত্বককে নরম, মসৃণ ও কোমল রাখতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই বুঝতে পারবেন দুধের উপকারিতা। তবে প্রতিদিন নিয়মিত পান করা করতে হবে।
৩) দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
দাঁত আমাদের সুন্দর চেহারার একটি অংশ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দাঁত ক্ষয় হতে শুরু করে। অনেকেরই অল্প বয়সে দাঁত নষ্ট হয়ে যায়। যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য দুধ পান করা খুবই উপকারী। কারণ দুধে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের ক্ষয় সারাতে সক্ষম। এর জন্য প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ পান করা উচিত।
৪) পেটের সমস্যা সারায়
পেটের সমস্যা দূর করতে দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কারণ দুধে রয়েছে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম যা পেটের সমস্যা নিরাময়ের অন্যতম ওষুধ। কিন্তু তার জন্য আপনাকে কম চর্বিযুক্ত দুধ খেতে হবে।
৫) মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে
আমরা ইতিমধ্যে জানি যে দুধে প্রচুর পুষ্টি রয়েছে। এটি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যখন আমরা চিন্তা করি, আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এই সমস্যা সারাতে দুধ খুবই কার্যকরী।
এই কারণে, প্রতিদিন নিয়মিত দুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন। ফলে আপনার মানসিকতা ভালো থাকবে।
৬) হার্ট সুস্থ রাখে
আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত দুধ পান করতে পারেন তবে আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে। তবে শুধু চর্বিযুক্ত দুধ খাওয়া উচিত। আর এই দুধ পানের ফলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়তে থাকে । যার কারণে হার্ট ভালো থাকে।
৭) হাড় এবং পেশী শক্তিশালী করে
দুধে রয়েছে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস ইত্যাদি যা আমাদের হাড় ও পেশী মজবুত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে চিকিৎসকরা শিশুদের প্রতিদিন দুধ পান করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও, বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করা উচিত। ফলে শরীর সুস্থ থাকবে।
৮) চুল স্বাস্থ্যকর করে
বর্তমানে দুধ দিয়ে বিভিন্ন হেয়ার প্যাক তৈরি করা হয়। দুধ চুল সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি নিয়মিত দুধ পান করতে পারেন তবে এটি অবশ্যই আপনার চুলকে স্বাস্থ্যকর করবে। এছাড়াও, আপনি 10-20 মিনিটের জন্য আপনার চুল দুধে ভিজিয়ে রাখতে পারেন, ফলস্বরূপ, আপনার চুল স্বাস্থ্যকর হবে।
৯) ডায়াবেটিসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
গবেষকদের মতে, দুধ পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম থাকে। যা ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। তবে শুধুমাত্র কম চর্বিযুক্ত দুধ পান করুন।
১০) শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে
যারা ওজন কমাতে চান তাদের জন্য দুধ খুবই উপকারী।দুধ শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। ফলে দ্রুত ওজন কমবে।
১১) ফিটনেস আপনাকে ফিট এবং সুস্থ রাখে
আমরা আমাদের শরীরকে ফিট ও সুস্থ রাখতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে থাকি। অনেকেই বিভিন্ন ব্যায়াম করেন । দেখা যায় শরীর ফিট হয় না। তাই এখন আমরা আপনাকে শরীর ফিটনেস হওয়ার একটি সহজ উপায় বলব যা আপনি আগে কখনো শোনেননি তা হল প্রতিদিন নিয়মিত দুধ পান করা। আপনি যদি নিয়মিত দুধ পান করতে পারেন তবে আপনার শরীর অল্প সময়ের মধ্যেই ফিট হয়ে যাবে।
১২) শরীরে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে
আমরা সবাই জানি যে দুধ আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করতে সক্ষম। কারণ দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস ইত্যাদি যা শরীরে শক্তি তৈরি করে।
Read More
কাজ করে ক্লান্ত হয়ে আমরা যদি এক গ্লাস দুধ পান করতে পারি তাহলে এই ক্লান্তি দূর হবে। এছাড়া আমাদের প্রত্যেকেরই প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাওয়া উচিত।
১৩) পেট পরিষ্কার রাখে এবং হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়
দুধ আমাদের পেট পরিষ্কার করতে পারে। কারণ দুধ পানযোগ্য খাবার। ফলে পেট পরিষ্কার রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আপনি জেনে অবাক হবেন যে দুধ হজমে উন্নতি করতে সাহায্য করে। আমরা হজমের উন্নতির জন্য ডাক্তারের কাছে যাই। কিন্তু দুধ হজমের উন্নতির জন্য খুবই কার্যকরী। তাই পেট পরিষ্কার ও হজমশক্তি ভালো রাখতে প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন।
১৪) রাতে ভালো ঘুমের জন্য ভালো
আমাদের মধ্যে অনেকের রাতে ঘুম খুবই কম হয়। ফলে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আপনি জানেন কি রাতে ভালো ঘুমের জন্য দুধ খুবই কার্যকরী একটি খাবার? প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করতে পারলে রাতে ভালো ঘুম হবে।
১৫) শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করে
আমরা ইতিমধ্যে জানি যে দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন রয়েছে। এছাড়া দুধে রয়েছে পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাসসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। যা আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দূর করতে সক্ষম। তাই প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। প্রতিদিন এক গ্লাস খেতে না পারলে দুই থেকে তিন দিন পরপর খেতে হবে।
১৬) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
গবেষকদের মতে, দুধ ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে। কারণ দুধে থাকা ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাই ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে প্রতিদিন দুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
১৭) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
রক্তচাপ একটি অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, পটাশিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। রক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিই। কিন্তু প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করতে পারলে আপনার রক্তচাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কারণ দুধের বিভিন্ন উপাদান আমাদের রক্তনালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
পরিশেষে
বন্ধুরা, আশা করি আপনারা দুধ খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। তারপরও যদি কিছু জানার বাকি থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি আমরা সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। বন্ধুরা, আরেকটি বিষয় হল আপনি আমাদের webmission24 ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নতুন এবং বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পাবেন। নিয়মিত এই নতুন পোস্ট গুলো দেখার জন্য অনুরোধ রইলো।
Pingback: ডাবের পানির ২০টি উপকারিতা - ২০২৩ - webmission24